Medicine

এসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল

ব্যবহার:জ্বর বা শরীর ব্যথার কারণে অনেক সময় চিকিৎসকরা প্যারাসিটামল লিখে থাকেন।

প্রতিক্রিয়া:প্যারাসিটেমল বেশীদিন খেলে যকৃতের সমস্যা হতে পারে।

অ্যাসপিরিন

ব্যবহার:হার্টের অসুখ বা ডায়াবেটিস এর জন্য।

প্রতিক্রিয়া:ইচ্ছে মত এই ওষুধ খাওয়া হলে একপর্যায়ে আমাদের খাদ্য থলি ছিড়ে যায়। তখন রক্তক্ষরণ ও হয়। অনেকসময় দেখা যায়, রোগীরা নিজে নিজে ওষুধটি খেয়ে খেয়ে একসময় পায়খানার পথে বা মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়।

রেনিটিডিন বা ওমিপ্রাজল বা গ্যাসের ওষুধ

প্রতিক্রিয়া:অনিয়ন্ত্রিতভাবে এই ওষুধটি খেলে তাৎক্ষণিকভাবে | গ্যাসের কষ্ট হয়তাে কমে, কিন্তু অনেকের লুজ মােশন হয়। তখন শরীরের পুষ্টি বেরিয়ে যায়, আয়রন গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়, শরীর প্রয়ােজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি পায় না। | রােগীদের শরীরে রক্তশূন্যতারও তৈরি হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এসব ওষুধ খেলে শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা কমে যায়। তখন অ্যাসিডের কারণে যেসব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যেতে, সেটা আর হয়না। ফলে শরীরে সংক্রমণ বেড়ে যায়। আবার অ্যাসিডের অভাবে ক্যালসিয়াম দ্রবীভূত হয় না, ফলে হাড়ের ক্ষয় বাড়ে।

আইবুপ্রােফেন বা ডাইক্লোফিনাক বা ব্যথানাশক ওষুধ

ব্যবহার:গা ব্যথা, হাত-পা ব্যথা বা মাথা ব্যথার জন্য অনেকে নানা ধরণের ব্যথা নাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে কোন কারণে ব্যথা পেলে ফার্মেসি থেকে আইবুপ্রােফেন অথবা ডাইক্লোফিনাক জাতীয় ওষুধ কিনে খেতে শুরু করেন।

প্রতিক্রিয়া:এটা পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে, পাকস্থলীর ক্ষতি করতে পারে, রক্তক্ষরণ হতে পারে। অনেকের হাতে-পায়ে পানি চলে আসে, ফুলে যায়। এসব ওষুধ দীর্ঘদিন খেলে অ্যানালজেসিক নেফ্রোপ্যাখি, গ্যাস্ট্রোইনটেসটাইনাল ব্লিডিং হতে পারে। অনেকের হজম শক্তি কমে যায়, আলসার হয়, ওষুধে নেশাগ্রস্তও হয়ে | পড়তে পারেন।

অ্যান্টিবায়ােটিক

প্রতিক্রিয়া:অধ্যাপক ড. কানিজ মওলা বলছেন, প্রতিটা অ্যান্টিবায়ােটিকের একেক ধরনের প্রতিক্রিয়া আছে। লুজ মােশন হতে পারে, র্যাশ উঠতে পারে, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, ঝাপসা দেখার মতাে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই | ওষুধটি কখনােই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত না। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়ােটিক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু অভিযােগ রয়েছে, তা মানা হয়না। ড. কানিজ মওলা বলছেন, "নিয়ম মেনে না খেলে, মাঝপথে বন্ধ করে দিলে তার শরীরে ওই ওষুধের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরােধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। সারা জীবনেও আর এই ওষুধে তার শরীরে কোন কাজ হবে না। তখন দেখা যায়, চিকিৎসকরা ওষুধ দিলেও সেটা কাজ করে না।" সেই সঙ্গে একটা অ্যান্টিবায়ােটিক ওষুধের সঙ্গে অন্যান্য আরও রােগের সম্পর্ক আছে। ফলে এ ধরনের ওষুধ দেয়ার আগে আরও অনেক বিষয় বিবেচনার দরকার রয়েছে।

মেট্রোনিডাজল

ব্যবহার:অধ্যাপক ড. কানিজ মওলা বলছেন, বাংলাদেশের আরেকটি খুব কমন ওষুধ হলো মেট্রোনিডাজল গ্রুপের ওষুধ। পেট খারাপ হলেই এটা কিনে খেয়ে ফেলেন। এটি এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক।

প্রতিক্রিয়া:এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় র‍্যাশ ওঠার পাশাপাশি রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তখন তিনি আরেকটা সমস্যায় পড়বেন। তার রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথার সমস্যা হতে পারে। বেশি শক্ত পায়খানা হলে মলদ্বার ফেটেও যেতে পারে। আবার অনেকে অনেকে পায়খানা নরম করার জন্য ল্যাক্সেটিভ জাতীয় ওষুধ খান। কিন্তু বেশি খেয়ে ফেললে শরীরের ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়ে যেতে পারে।

ক্লোরফেনিরামিন ম্যালেট

ব্যবহার:জেনেরিক নাম ক্লোরফেনিরামিন ট্যাবলেট হলেও সবার কাছে হিস্টাসিন নামেই বেশি পরিচিত। এটি একপ্রকার অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ। অ্যালার্জি বা সর্দি-কাশির জন্য অনেকে খেয়ে থাকেন।

প্রতিক্রিয়া:ড. মওলা বলছেন, এই ওষুধ ওভার দ্যা কাউন্টার খেলে হয়তো তেমন ক্ষতি নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে এটার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।

অন্যান্য

অনেক সময় অনেকে গলার সমস্যায় ফার্মেসি থেকে থাইরয়েডের বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ কিনে খান। কিন্তু থাইরয়েডের সমস্যায় হাইপো বা হাইপার-দুই রকমের সমস্যা হতে পারে। ''দেখা গেল, হাইপার সমস্যায় তারা হাইপোর ওষুধ দিয়ে দিলো বা হাইপোর সমস্যায় হাইপার ওষুধ। তখন রোগীর ক্ষেত্রে উল্টো রিঅ্যাকশন ঘটবে, '' বলছেন ড. মওলা। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেলে শরীরের নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। মোটা হওয়ার জন্য অনেকে এসব ওষুধ খেলে সারাজীবনের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। আবার এটা হঠাৎ বন্ধ করে দিলে এডিসনিয়ান ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে, যাতে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে।

© copyright-2020 Rejaul